মা তো মা ই হয় | Love of Mother | Bengali Story


এবারে পুজোয় বর্ধমানের বেশিরভাগ পুজো মণ্ডপ অহনা ও তার পরিবার একই সাথে দেখে বাড়ি ফিরছিল। রাত তখন সাড়ে এগারোটা, বাড়ির সামনের 2-3 টা গলির আগেই অহনার বাবার মনে পড়ে যে ATM থেকে টাকা তুলতে হবে,আজ প্রায় অনেকটা টাকা খরচ হয়ে গেছে। তাই ওর বাবা, ওকে আর ওর মা কে নামিয়ে দিয়ে বাইক টা ঘুরিয়ে ওর ছোটো ভাই কে নিয়ে রেল স্টেশনের ATM machine তে টাকা তুলতে যায়।

2-3 টা গলির পরেই ওদের বাড়ি তাই মা মেয়ে হাত ধরে কথা বলতে বলতে পাড়ার পুজো মণ্ডপের সামনে দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। মণ্ডপ পেরোলেই একটা অন্ধকার গলি, তারপরেই ওদের বাড়ি। কিন্তু ওই গলিতে এই পুজোর সময় মাতালরা মদ খায় আড্ডা মারে!

অহনা ফোনের ফ্ল্যাশ টা জ্বেলে মায়ের হাত শক্ত করে ধরে গলির মুখে পা রাখলো। মা মেয়ে যা ভয় পাচ্ছিল তাই হল! কুড়ি বাইশ বছরের একটা ছেলে ওর হাত থেকে ফোন টা কেড়ে নিয়ে মুখ টা রুমাল দিয়ে চেপে ধরে। আর ওর মা ওটা দেখে ঘাবড়ে যায়, কি করবে খুঁজে পাচ্ছিল না আর সে নিজের ফোন টাও বাড়িতে ফেলে এসেছে!

ওর মা ছুটে গলির বাইরে আসে একটা লাঠি বা অধলা ইট খোঁজার জন্য, কিন্তু রাস্তায় কোনো নুড়ি পাথরও ছিল না! তখনই দেখলো খোলা চুলে এক মহিলা তাকে একটা ত্রিশূল বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওর মা সাত পাঁচ না ভেবে ত্রিশূল টা নিয়ে এক নিশ্বাসে দৌড়ে গলিতে ঢুকে আন্দাজ করে সেটা ওই ছেলেটার দিকে ছুঁড়ে মারে।

আর অব্যর্থ নিশানায় ছেলেটার একদম বুকের বাম দিকে গিয়ে ত্রিশূল টা গেঁথে যায়।তখনকে অহনা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে আছে, তবে হয়তো আর একটু দেরি হলে ওর সর্বনাশ হয়ে যেত!

ওদিকে বাড়িতে ঠাকুমা একা,ওদের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবছর ওর ঠাকুমা দেশের বাড়ি যেতে পারেনি। অহনার বাবা আর ভাই ATM থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফিরে ঠাকুমার থেকে জানতে পারে, ওর মা আর ও কেউই বাড়ি ফিরে নি!

তখনই ওর বাবা ওর ফোনে কল করে আ2র রাস্তায় পড়ে থাকা ফোনে স্ক্রিনের লাইট টা দেখতে পায় ওর মা, কোনরকমে ফোন টা খুঁজে নিয়ে কল টা রিসিভ করে কারণ ফোন টা সাইলেন্ট মুডে ছিল!

ওর বাবা বাইক নিয়ে সেই গলিতে পৌঁছায় আর ওদেরকে বাড়িতে নিয়ে আসে, প্রায় এক ঘন্টা পর অহনার জ্ঞান ফিরে। নবমীর সকালে পুজো মণ্ডপে হইচই পড়ে গেছে, মায়ের হাতের ত্রিশূল টা নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না…


1 thought on “মা তো মা ই হয় | Love of Mother | Bengali Story”

Leave a Comment